ফেনী-৩ আসনে জুলাই যোদ্ধা প্রিন্স মাহামুদ আজিমকে মনোনয়নের দাবি তীব্র হচ্ছে
সহিংসতার রাজনীতি বন্ধ হোক। কে কাকে মারছেন আপনারা?
সে তো আপনার শরীরের বুলেট নিবে বলে হাতে হাত ধরে দাড়ানো আপনার মতোই আরেকজন ভাই।
এই প্রশ্নের উত্তর আজ রাজনীতিকদের নিজেদেরই দিতে হবে—
যেখানে সকল পক্ষ এখনো শহীদের তাজা রক্তে দাঁড়িয়ে পরস্পর এক হতে পারছে না,
সেখানে এই দেশ ও দেশের মানুষ তাদের সুদূরপ্রসারী উন্নয়ন কতটা হবে, তা অনুমান করাই যায়।
“যদি আজ তোমার ভাই পড়ে যায়, কালকে তুমি কাকে দেখতে চাও—বিচার নাকি প্রতিশোধ?”
যে সাধারণ ছাত্র-জনতার রক্তে আপনারা দেশটাকে যে যার মতো পেয়ে বসে রয়েছেন,
তাদেরই ত্যাগে গড়া এই রাষ্ট্র।
স্বৈরাচারও জনতার কথা শুনে নাই—
তখন জনতাই নিজের শাসন অধিকার কেড়ে নিয়েছিল।
এত প্রাণের বিনিময়ে এখনো যদি রাজনীতি শুধু সহিংসতা আর প্রতিহিংসায় আটকে থাকে,
তাহলে এবার মাঠের কৃষক মাঠ ছেড়ে পার্লামেন্টে এসে দেশ চালাবে।
ভালো লাগবে?
কৃষক আবার কী দেশ চালাবে?
এই প্রশ্নের উত্তর সহজ—
যখন রাজনীতিকরা দেশের সেবা ভুলে ক্ষমতার খেলা খেলেন,
তখন জনতাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব নেয়।
বাংলার কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ—
তারাই এই দেশের প্রকৃত শক্তি।
তাদের মেরুদণ্ড সোজা, তাই তারা কারও গোলামী মানে না।
ভারত বা পাকিস্তানের কাছে মাথা নত করার প্রয়োজন নেই,
আমেরিকাও আমার মতোই একটি দেশ।
তারা বড়, আমরা ছোট—কিন্তু মর্যাদায় বাংলাদেশ কখনোই ছোট নয়।
আমরা ভিক্ষুক জাতি নই।
অন্য দেশ অসহায় হলে আমাদের সক্ষমতা তাদের পাশে দাঁড়াবে—
তবে সেটি আমাদের জনগণের স্বার্থ নিশ্চিত করেই হবে,
গোলামী দিয়ে নয়।
সংগ্রাম করে পৃথিবীর অনেক দেশ স্বাধীন হয়েছে, উন্নতও হয়েছে।
কিন্তু তোষামোদ আর দাসত্বে কোনো জাতি উন্নত হতে পারে না।
খুব বেশী হলে কিছু লোক বেগম পাড়ায় বাড়ি করবে,
কিন্তু জাতির ভাগ্য কখনো বদলাবে না।
রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে দেশ তাদেরই সম্পত্তি।
কিন্তু দেশের উপরে আছে জনগণ।
জনগণকে মূল্য দিন, তাহলেই নিজেরা মূল্য পাবেন।
না হলে রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন কী?
জনতাই দেশ ও প্রশাসন চালাক।
যারা সামান্য ষড়যন্ত্রেই ক্ষমতার মোহে নিজেদের ঐক্য ভেঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়,
তাদের হাতে জনগণ কেন দেশের ভবিষ্যৎ তুলে দেবে?
একটু পরস্পর ত্যাগ করতে পারছেন না—
আর বলছেন হাসিনাকে প্রতিহত করবেন?
জনগণ কি এই নাটক দেখবে?
এক দল নিজেদের ভেতরেই ব্যায়াম চালায়,
এক পরিবারে দুই টিম যুদ্ধ করে—
এমন জানলে ছাত্র-জনতা কখনো আন্দোলনে নামত না!
নেতারা শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করেছেন ঠিকই,
কিন্তু হাসিনা সে জন্য পালায়নি।
তিনি পালিয়েছেন যখন জনতার বোন, ভাই, মা, বাবা
নিজেরা রাজপথে নেমে পড়েছিলেন।
জনগণ যখন পরিবারের মতো এক হয়েছিল—
তখনই সন্ত্রাসের দুর্গ ভেঙে যায়।
এনসিপি এখন ভোটের বাটোয়ারায় বসে,
কিন্তু শহীদের রক্তের বিচার নেই।
জুলাই আহতরা আজও ব্যথায় কাঁদে,
তাদের চিকিৎসার খোঁজ কেউ নেয় না।
নাহিদ, হাসনাত, আসিফ —
তোমরা একসময় জনতার মুখ ছিলে,
আজ তোমাদের নাম শুনে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেয়।
হাসিনা স্বাধীনতা বিক্রি করতে ৫৩ বছর সময় নিয়েছিল,
আর তোমরা তিনদিনেই হারিয়েছো নৈতিকতা।
নির্দলীয় জুলাই বিপ্লবকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছো।
আমাদের রক্তের উপর গড়ে তোলা দল নিয়ে
যদি সত্যিই দেশ গড়তে চাও,
তবে আবেগ নয় — বাস্তব কর্মে প্রমাণ দাও।
না হলে সব ছেড়ে পড়ার টেবিলে ফিরে যাও।
‘সস্তা পদযাত্রা’ নয় —
জুলাই পদযাত্রা এমনও হতে পারতো, ৬৪ জেলার ৬৪ হাসপাতাল ভিজিটের মাধ্যমে জনসংযোগ।
যার সবকটাতেই জুলাই যোদ্ধারা বেদনাদয়ক সময় পার করছে।
যখন ফেনীর মানুষ বন্যায় ভাসছে, তখন এনসিপি পদযাত্রার নামে জলকেলি খেলে।
তোমাদের আয়োজনই বলে দিচ্ছে —
তোমাদের মধ্যে অনেকেই “শিক্ষিত শয়তান” ছাড়া আর কিছু নয়।
জনতা আর চায় না ক্ষমতার রাজনীতি।
তারা চায় উন্নয়ন, ঐক্য, দায়িত্ব।
দেশের প্রয়োজনে প্রতিযোগিতা হোক, দলের নয়।
— প্রিন্স মাহামুদ আজিম, জুলাই যোদ্ধা ও সাবেক সংগঠক, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
Comments
Post a Comment